বাড়ছে হার্ট অ্যাটাক-স্ট্রোকের ঝুঁকি, যেভাবে সুস্থ রাখবেন নিজেকে

একটা সময় ছিল যখন মানুষ মনে করতেন যে, নারীদের সাধারণত হার্ট অ্যাটাক হয় না। কিন্তু বর্তমান চিত্রটা একদম বদলে গেছে। কর্মক্ষেত্রে কাজের চাপ বেড়েছে। রয়েছে সংসারের দায়িত্ব। সব মিলিয়ে বেড়েছে মানসিক চাপ। তার সঙ্গে কী খাচ্ছেন, কখন খাচ্ছেন তার কোনও ঠিক নেই। নিয়মিত শরীরচর্চা করারও কোনও অভ্যাস নেই। আর এই সব মিলিয়ে প্রভাব পড়ছে নারীদের হৃদয়ের ওপর। 

 

সমীক্ষা বলছে, এখন ৪ জন নারীর মধ্যে একজন হৃদরোগের শিকার। আর পরিণাম হচ্ছে মৃত্যু অথবা প্যারালাইজড। এক বছরের হিসাব বলছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নারীদের মধ্যে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন ৬১৬ জন। স্ট্রোক হয়েছিল ২৫৩ জনের এবং হৃদরোগে মারা গিয়েছিলেন ৩৩১ জন।

 

সাধারণত হরমোনের কারণে নারীদের হৃদযন্ত্র পুরুষদের তুলনায় সুস্থ থাকে। কিন্তু জীবনধারা বদলের কারণে পরিবর্তন হয়ে যায় হরমোনের ভারসাম্যও। এর পাশাপাশি যদি ধূমপান ও অ্যালকোহল সেবনের অভ্যাস থাকে, তাহলে আরও চাপ বাড়ে হৃদযন্ত্রের ওপর।

 

বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, নারীরা শিকার হচ্ছেন স্ট্রোকের। এর ফলে শরীরের একদিকের অংশ পুরোপুরি প্যারালাইজড হয়ে যায়। ফিজিওথেরাপি করেও সব সময় সুফল পাওয়া যায় না এই ক্ষেত্রে। আর কিছুদিন পর পরিণাম হয় মৃত্যু। তাই এই পরিণতিতে পৌঁছানোর আগে নিজের যত্ন নিন। হার্টকে ভাল রাখতে চাইলে জীবনধারায় কয়েকটি পরিবর্তন আনুন।

 

ডায়েটের দিকে বিশেষ নজর দিন- সাদা ভাতের পরিমাণ কমিয়ে দিন। এর বদলে ব্রাউন রাইস খেতে পারেন। আটা, জোয়ার, বাজরার তৈরি খাবার খান। ওটস, ডালিয়া, তিসির বীজ, কুমড়োর বীজ, চিয়া বীজের মতো খাদ্যশস্যগুলো ডায়েটে রাখুন। এতে ফাইবারের পরিমাণ বেশি থাকে যা কোলেস্টেরল ও রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং এর ফলে হার্ট ভাল থাকে।

 

খাদ্যতালিকায় ফলের পরিমাণ বাড়ান- আমন্ড, কাজু, আখরোটের মতো বাদামকে ডায়েটে রাখুন। এর পাশাপাশি কলা, বেরি, আঙুর এবং ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ ফল বেশি করে খান। এতে ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে, যার ফলে চাপ পড়ে না হার্টের ওপর।

 

নিয়মিত ব্যায়াম করুন- কাজের ক্ষেত্রে মানসিক চাপকে এড়িয়ে চলা সব সময় সম্ভব হয় না। কিন্তু আপনাকে স্ট্রেস মুক্ত থাকতেই হবে। এই ক্ষেত্রে আপনাকে সাহায্য করবে যোগব্যায়াম। নিয়মিত যোগব্যায়াম করলে মানসিক চাপ কমে এবং শরীরে রক্ত চলাচল উন্নত হয়। এতে শুধু হৃদয় নয়, বরং সামগ্রিক স্বাস্থ্য উন্নত হয়। যদি যোগব্যায়াম করার সময় না হয়, তাহলে বাড়ির দৈনন্দিন কাজ করুন। যেমন- ঘর মোছা, রান্না করা, বাগানে সময় কাটানো ইত্যাদি। এতেও শরীর সক্রিয় থাকে।

 

ধূমপান ও মদ্যপান থেকে বিরত থাকুন- নারী, পুরুষ নির্বিশেষে হার্ট অ্যাটাকের অন্যতম কারণ ধূমপান ও মদ্যপান। এই বদঅভ্যাস যদি আপনি ছাড়তে পারেন, তাহলে রোগমুক্ত জীবন কাটাতে পারবেন।সূএ:বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ভারত বাংলাদেশ সফরে না এলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বিসিবি!

» পিআর পদ্ধতিতে ভোটাধিকার নিশ্চিত হবে, রোধ হবে দুর্নীতি : মাসুদ সাঈদী

» ইনসাফ ও মর্যাদার বাংলাদেশের জন্য লড়াই করছে এনসিপি : নাহিদ ইসলাম

» ‘কুলি’-তে আমির খানের রাফ লুক, ফার্স্ট লুকেই চমক

» ফ‍্যাসিস্টদের পুশইন করুন, বিচার করতে প্রস্তুত আমরা : নাহিদ

» টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হিমাচল, মৃত অন্তত ৬৩

» জয়ার সিনেমার ট্রেলার শেয়ার করে যা বললেন অমিতাভ

» ‘বাংলাদেশে ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগ বলে কোনো রাজনৈতিক দল থাকবে না’

» গোলাম মাওলা রনি টেলিভিশন টকশোতে অসত্য তথ্য ছড়াচ্ছেন : প্রেসসচিব

» দমকা হাওয়াসহ বজ্রবৃষ্টির শঙ্কা, ৭ নদীবন্দরে সতর্ক সংকেত

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

বাড়ছে হার্ট অ্যাটাক-স্ট্রোকের ঝুঁকি, যেভাবে সুস্থ রাখবেন নিজেকে

একটা সময় ছিল যখন মানুষ মনে করতেন যে, নারীদের সাধারণত হার্ট অ্যাটাক হয় না। কিন্তু বর্তমান চিত্রটা একদম বদলে গেছে। কর্মক্ষেত্রে কাজের চাপ বেড়েছে। রয়েছে সংসারের দায়িত্ব। সব মিলিয়ে বেড়েছে মানসিক চাপ। তার সঙ্গে কী খাচ্ছেন, কখন খাচ্ছেন তার কোনও ঠিক নেই। নিয়মিত শরীরচর্চা করারও কোনও অভ্যাস নেই। আর এই সব মিলিয়ে প্রভাব পড়ছে নারীদের হৃদয়ের ওপর। 

 

সমীক্ষা বলছে, এখন ৪ জন নারীর মধ্যে একজন হৃদরোগের শিকার। আর পরিণাম হচ্ছে মৃত্যু অথবা প্যারালাইজড। এক বছরের হিসাব বলছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নারীদের মধ্যে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন ৬১৬ জন। স্ট্রোক হয়েছিল ২৫৩ জনের এবং হৃদরোগে মারা গিয়েছিলেন ৩৩১ জন।

 

সাধারণত হরমোনের কারণে নারীদের হৃদযন্ত্র পুরুষদের তুলনায় সুস্থ থাকে। কিন্তু জীবনধারা বদলের কারণে পরিবর্তন হয়ে যায় হরমোনের ভারসাম্যও। এর পাশাপাশি যদি ধূমপান ও অ্যালকোহল সেবনের অভ্যাস থাকে, তাহলে আরও চাপ বাড়ে হৃদযন্ত্রের ওপর।

 

বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, নারীরা শিকার হচ্ছেন স্ট্রোকের। এর ফলে শরীরের একদিকের অংশ পুরোপুরি প্যারালাইজড হয়ে যায়। ফিজিওথেরাপি করেও সব সময় সুফল পাওয়া যায় না এই ক্ষেত্রে। আর কিছুদিন পর পরিণাম হয় মৃত্যু। তাই এই পরিণতিতে পৌঁছানোর আগে নিজের যত্ন নিন। হার্টকে ভাল রাখতে চাইলে জীবনধারায় কয়েকটি পরিবর্তন আনুন।

 

ডায়েটের দিকে বিশেষ নজর দিন- সাদা ভাতের পরিমাণ কমিয়ে দিন। এর বদলে ব্রাউন রাইস খেতে পারেন। আটা, জোয়ার, বাজরার তৈরি খাবার খান। ওটস, ডালিয়া, তিসির বীজ, কুমড়োর বীজ, চিয়া বীজের মতো খাদ্যশস্যগুলো ডায়েটে রাখুন। এতে ফাইবারের পরিমাণ বেশি থাকে যা কোলেস্টেরল ও রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং এর ফলে হার্ট ভাল থাকে।

 

খাদ্যতালিকায় ফলের পরিমাণ বাড়ান- আমন্ড, কাজু, আখরোটের মতো বাদামকে ডায়েটে রাখুন। এর পাশাপাশি কলা, বেরি, আঙুর এবং ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ ফল বেশি করে খান। এতে ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে, যার ফলে চাপ পড়ে না হার্টের ওপর।

 

নিয়মিত ব্যায়াম করুন- কাজের ক্ষেত্রে মানসিক চাপকে এড়িয়ে চলা সব সময় সম্ভব হয় না। কিন্তু আপনাকে স্ট্রেস মুক্ত থাকতেই হবে। এই ক্ষেত্রে আপনাকে সাহায্য করবে যোগব্যায়াম। নিয়মিত যোগব্যায়াম করলে মানসিক চাপ কমে এবং শরীরে রক্ত চলাচল উন্নত হয়। এতে শুধু হৃদয় নয়, বরং সামগ্রিক স্বাস্থ্য উন্নত হয়। যদি যোগব্যায়াম করার সময় না হয়, তাহলে বাড়ির দৈনন্দিন কাজ করুন। যেমন- ঘর মোছা, রান্না করা, বাগানে সময় কাটানো ইত্যাদি। এতেও শরীর সক্রিয় থাকে।

 

ধূমপান ও মদ্যপান থেকে বিরত থাকুন- নারী, পুরুষ নির্বিশেষে হার্ট অ্যাটাকের অন্যতম কারণ ধূমপান ও মদ্যপান। এই বদঅভ্যাস যদি আপনি ছাড়তে পারেন, তাহলে রোগমুক্ত জীবন কাটাতে পারবেন।সূএ:বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com